
মনজুরুল ইসলাম নাটোর জেলা প্রতিনিধি
নাটোরে বিএনপি নেতা গোলাম সারোয়ারের ব্যতিক্রমী ঈদ উৎসব আয়োজনে অতিথি হয়েছিলেন তিন শতাধিক গরিব-দুঃখী ও অসহায় মানুষ। এ সময় অতিথিদের চেয়ার-টেবিলে বসিয়ে মাংস-বিরানি খাওয়ানো হয়। এরপর তাদের হাতে কোরবানির মাংস ও নগদ টাকা প্রদান করেন এ বিএনপি নেতা।
শনিবার (৭ জুন) দুপুরে নাটোর সদর উপজেলার একডালা এলাকায় তার নিজ বাসভবনে এই ব্যতিক্রমী ঈদ উৎসবের আয়োজন করা হয়। ব্যতিক্রমী এ ঈদ উৎসব আয়োজনে আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় তিন শতাধিক নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন। এ ঈদ উৎসবে মসজিদ-মাদরাসার ইমাম ও খতিবসহ সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিরাও উপস্থিত ছিলেন। এ ধরনের আয়োজনে অতিথি হিসেবে আসতে পেরে খুশি তারা। দাওয়াত খেতে আসা মুর্শিদা বেগম বলেন, প্রতি কোরবানির ঈদে চেয়ারম্যান সাহেব আমাদের জন্য দুপুরের খাবারের আয়োজন করেন। আমরা পেট ভরে মাংস-পোলাও খাই এবং অনেক আনন্দ করি। খাওয়া শেষে তিনি মাংস এবং ঈদ বোনাস দেন।
মতিজা নামে আরেক নারী বলেন, আমি আর আমার স্বামী প্রতি ঈদের দিন চেয়ারম্যানের বাড়িতে দাওয়াত খেতে আসি। তিনি অনেক ভালো মনের মানুষ। আমরা যারা গরীব মানুষ, যাদের গরুর মাংস কেনার সামর্থ্য থাকে না, ঈদের দিন দুপুরে সবাই এখানে এসে পোলাও-মাংস খাই। বাড়িতে যাবার সময় মাংস এবং গাড়ি ভাড়ার টাকাও দেন তিনি। দাওয়াতে আসা ৫০ বছরের ঝর্ণা বেগম বলেন, আমাদের মতো গরীব মানুষের কথা কেউ মনে রাখে না। কিন্তু সারোয়ার চেয়ারম্যান প্রতি ঈদে আমাদের দাওয়াত দিয়ে মাংস-পোলাও খাওয়ান। অনেক ভালো লাগে – যখন সবাই একসঙ্গে বসে আনন্দ করে খাই। দাওয়াতে আসা লতিফ সিদ্দিক বলেন, ঈদের দিন চেয়ারম্যানের বাড়িতে এসে মাংস-পোলাও না খেলে দিনই কাটে না। তার বাড়িতে প্রথম কোরবানির মাংস খাওয়া হয়। এভাবে আমাদের কেউ দাওয়াত করেন না। তিনি অনেক বড় মনের মানুষ। এখানে প্রতিবছর ৩০০ থেকে ৪০০ মানুষ আসে। মনছুর রহমান নামে আরেক ব্যক্তি বলেন, আমাদের গরুর মাংস কেনার সামর্থ্য নেই। তাই সকালে চেয়ারম্যানের বাড়িতে মাংস কাটতে চলে আসি। দুপুরে মাংস-পোলাও খেয়ে বিকেলে টাকা ও মাংস নিয়ে বাড়িতে যাই।
তেবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা গোলাম সারোয়ার বলেন, প্রতি কোরবানি ঈদে গরিব-দুঃখী মানুষের মাঝে মাংস, টাকা ও খাবার বিতরণ করি। এ বছর ভিন্নভাবে তাদের বাড়িতে দাওয়াত করে খাওয়ার আয়োজন করেছি। এতে করে অন্তত এক দিন আমরা ধনী-গরীব সবাই এক টেবিলে বসে খেতে পারি। ঈদ উৎসবটা সবার, তাই সবাইকে নিয়ে ঈদের দিনটা আনন্দে উদযাপন করতে এ আয়োজন করেছি। ভবিষ্যতে প্রতি বছর এ ধরনের আয়োজন যেন করতে পারি সে দোয়া চাই। এভাবে গরবী-দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাই।