মোঃ মোজাম্মিল আলী,সিলেট বিভাগীয় প্রতিনিধি
পুলিশ হেফাজতে রায়হান হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলায় একজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত থেকে আসামিদের কারাগারে নেওয়া হয়। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে মহানগর দায়রা জজ আদালতে সিলেটে পুলিশ হেফাজতে রায়হান হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলায় একজনের জেরা ও সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত থেকে আসামিদের কারাগারে নেওয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে মহানগর দায়রা জজ আদালত
সিলেটে পুলিশের হেফাজতে রায়হান আহমদ (৩৪) হত্যা মামলায় জেরা সাক্ষ্য দিয়েছেন মহানগর পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহরিয়ার আল মামুন। মামলার আসামি সাময়িক বরখাস্ত হওয়া কনস্টেবল মোঃ হারুন অর রশিদের (৩২) পক্ষের আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর জেরা সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এম নাছির উদ্দিনের আদালতে সাক্ষ্য দেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা। শাহরিয়ার আল মামুন বর্তমানে মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার অতিরিক্ত উপকমিশনার পদে কর্মরত আছেন। মহানগর দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁউশলি (পিপি) নওশাদ আহমদ চৌধুরী বিষয়টি আমাদের নিশ্চিত করেছেন। সিলেটে রায়হান হত্যার আজ ৩ বছর, এরি মধ্যে ৬৯ সাক্ষীর মধ্যে ৫৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। বর্তমানে উচ্চ আদালতে জামিনের আবেদন করেছিলেন অভিযুক্ত কনস্টেবল মোঃ হারুন অর রশিদ। কিন্তু উচ্চ আদালত তাঁর জামিন নামঞ্জুর করেন এবং সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতকে আগামী ছয় মাসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। আজ উচ্চ আদালতের সেই নির্দেশ গ্রহণ করেন মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক।
সূত্র থেকে জানা যায় মামলার ৬৯ জন সাক্ষীর মধ্যে রায়হানের মা সালমা বেগম, স্ত্রী তাহমিনা আক্তার সাক্ষ্য দিয়েছেন গত ৭ সেপ্টেম্বর, সর্বশেষ সাক্ষ্য দেন সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত ৩ এর বিচারক শারমিন খানম। আজ দুপুরে আসামিপক্ষের আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ কর্মকর্তা শাহরিয়ার আল মামুনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। পরবর্তী তারিখে সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতের বিচারক, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন পুলিশ কর্মকর্তাদের সাক্ষ্য গ্রহণের কথা আছে।বাদীপক্ষের আইনজীবী এম ফজল চৌধুরী বলেন, শাহরিয়ার পুলিশ মোঃ আল মামুন আগে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। তখন অভিযুক্ত হারুন অর রশিদের পক্ষের আইনজীবী তাঁকে জেরা করেননি। পরে তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ ওই পুলিশ কর্মকর্তার জেরা সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। তিনি বলেন, মামলার ৬৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ৫৬ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এর মধ্যে দুজন সাক্ষী মারা গেছেন। সাক্ষ্য গ্রহণের এখন শেষ পর্যায়ে আছে। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামির পরীক্ষা ও যুক্তিতর্ক উপস্থাপন হবে। দ্রুত মামলার রায় হবে বলে আশা প্রকাশ করাহয়। আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলায় অভিযুক্ত ছয়জনের মধ্যে উচ্চ আদালতের নির্দেশে সাময়িক বরখাস্ত এসআই মোঃ হাসান উদ্দিন (৩২) জামিনে আছেন। এ ছাড়া অভিযুক্ত আবদুল্লাহ আল নোমান মামলার শুরু থেকে পলাতক। বাকি চার আসামি কারাগারে। পলাতক আসামি আবদুল্লাহ আল নোমানের বিষয়ে আদালতের নির্দেশে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ও মালামাল ক্রোকের আদেশ তামিল করেছে পুলিশ। আজ জেরা সাক্ষ্য গ্রহণকালে কারাগারে থাকা চার আসামি এবং জামিনে থাকা হাসান উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। এদিকে মামলার প্রধান অভিযুক্ত সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূঁইয়া গত ১০ সেপ্টেম্বর ব্যক্তিগত অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে আদালতে হাজিরা থেকে অব্যাহতির পিটিশন দাখিল করেন বলে জানা যায়।