ঢাকা মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩
১৩ চৈত্র ১৪২৯ বাংলা
শিরোনাম:
ভাইয়ের সঙ্গে অভিমান করে স্ত্রী সন্তান নিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা, মামুনের প্রবাস গমন উপলক্ষে শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদের সংবর্ধনা, ঘাটাইলে গারট্ট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ ৩ বছর যাবৎ মানব সেবায় নিয়োজিত, হত্যা মামলার আসামী র‍্যাবের হাতে গ্রেফতার, মহান স্বাধীনতা দিবস ২০২৩ উপলক্ষে, আগামী নির্বাচনে ভোলা – ৩ আসনে জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সকলের নিকট দোয়া ও সমর্থন কামনা করছেন নুরুননবী সুমন, আজ মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মানোনীয় প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি রমজানের শুভেচ্ছা এর পাশাপাশি আহাদ চৌধুরীর প্যানেলকে জয়ী করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মির্জা মোহাম্মদ মজিবর রহমান, আহাদ চৌধুরীর প্যানেলের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন, আজ ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস,

বঙ্গবন্ধু যদি ৭ মার্চ সরাসরি স্বাধীনতার ঘোষণা দিতেন তাহলে পাকিস্তানী সামরিক জান্তা রেসকোর্স ময়দানেই আক্রমন করতো!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:২৩:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ মার্চ ২০২৩ ১৩৪ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জেনারেল জিয়াউর রহমানের জীবদ্দশায় কোনো বিতর্ক ছিল না। কিন্তু জেনারেল জিয়ার মৃত্যুর পর থেকে এই ঘোষণা নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক হয়ে আসছে। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তান রাইফেলস এর ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা-মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা করেন। এই ঘোষণা প্রথমে মুজিবনগর সরকার অনুমোদন করে, পরে তা ১৯৭২ সালের সংবিধানে বিধানকৃত করা হয়। বঙ্গবন্ধুই বাংলাদেশের স্বাধীনতা-মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণাকারী।

২৭ মার্চ মেজর জিয়াউর রহমান চট্টগ্রাম জেলার কালুরঘাট অস্থায়ী বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণাপত্র ঘোষণার মতো করে নিজ কন্ঠে ঘোষণা করেছিলেন। এর পূর্বে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ভাষণের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু পরোক্ষভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। ৭ মার্চের ভাষণ এক অভূতপূর্ব কৌশলী ভাষণ ছিল। বঙ্গবন্ধু তাঁর ভাষণে বলেন, ‘আমি যদি হুকুম দিবার না-ও পারি, তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে। রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরও দেবো, তবুও এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব, ইনশাল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা’।

বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চ পরোক্ষভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছিলেন। যদিও ওই ঘোষণা প্রত্যক্ষ কিংবা আনুষ্ঠানিক ছিল না। কিন্তু স্বাধীনতা-মুক্তিযুদ্ধ ঘোষণার অবশিষ্ট কিছুই ছিল না। ৭ মার্চের ১৯ মিনিটের ভাষণ একটি ঐতিহাসিক ভাষণ। ওই দিন রেসকোর্স ময়দানে উপাস্থিত জনতার হৃদয়ের উদ্বেলিত-উচ্ছ্বসিত আবেগ সারা বংলার মানুষের অন্তরে উত্তাল তরঙ্গের ঢেউ তুলেছিল। এখনো ওই ভাষণ বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে ঘুমিয়ে থাকা স্বাধীনতা-মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগ্রত করে। ৭ মার্চ ভাষণ দেওয়ার পূর্বে বঙ্গবন্ধু বিশিষ্ট রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং ছাত্রলীগ নেতাদের সাথে মতবিনিময় করেছিলেন। তখন ছাত্রলীগের মধ্যে দুটি গ্রুপ ছিল। স্বাধীনতার ঘোষণাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে প্রচন্ড বিতর্ক হয়েছিল। সিরাজুল আলম খান এর সমর্থকরা চেয়েছিল বঙ্গবন্ধু ‘জনগণপ্রজাতন্ত্রী’ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করবেন আর ছাত্রলীগের সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকীর সমর্থিতরা চেয়েছিল স্বাধীনতার ঘোষণা থাকবে, কিন্তু বিচ্ছিন্নতাবাদের অপপ্রচার যাতে কেউ করতে না পারে সেদিকটা বিবেচনায় রাখতে হবে।

৭ মার্চ যদি সরাসরি স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়া হতো তাহলে বাঙালি জাতির স্বাধীনতার সলিল-সমাধি রেসকোর্স ময়দানেই হয়ে যেতো। পাকিস্তানী সামরিক জান্তা রেসকোর্স ময়দানেই আক্রমন করতো। নিশ্চিহ্ন করে দিত বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার সংগ্রাম। বঙ্গবন্ধু এটা আগেই আঁচ করতে পেরেছিলেন। এ কারণেই তিনি সেখানে সরাসরি স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি। তবে ওই ভাষণের মধ্য দিয়ে তিনি কৌশলে সবকিছু ঘোষণা করেছিলেন। ৭ মার্চ যে তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন তা স্বাধীনতাকামী সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ মর্মে মর্মে অনুভব করেছিলেন। মেজর জিয়াউর রহমান বলেছেন যে, ৭ মার্চের ভাষণ ছিল আমাদের (বাঙালি সেনাবাহিনী) মুক্তিযুদ্ধের গ্রীণ সিগন্যাল। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি থেকে দাবি করা হয় যে, মেজর জিয়াউর রহমান ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সূচনালগ্নে কালুরঘাট অস্থায়ী বেতার কেন্দ্র থেকে প্রথম স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। এ জন্য তারা মিছিল-মিটিংয়ে জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া বলে স্লোগান দেন। তারা স্লোগানে বলেন, ‘স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া লও লও লও সালাম’।

২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস। এই স্বাধীনতা দিবস পালনে কোনো বিতর্ক নেই। তবে স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক বিরাজমান রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ২৬ মার্চের ঘোষণাপত্রকে স্বাধীনতাযুদ্ধে মুজিবনগর সরকার অনুমোদন দিয়েছিল। এ কারণে ওই দিনটি স্বাধীনতা দিবস হিসেবে স্বীকৃতিলাভ করেছে। এ জন্যই ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তান রাইফেলস এর ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার ভয়েস রেকর্ড প্রচার করা হয়। ঘোষণাটি ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে প্রচার হওয়ায় তখন তা ব্যাপক জনগোষ্ঠী শুনতে পায়নি। স্বাধীনতাকামী মুক্তিপাগল বাঙালি ও বিশ্ববাসীকে অবহিত করার জন্য বঙ্গবন্ধুর ওই ঘোষণাপত্র ব্যাপকভাবে প্রচার করার প্রয়োজন ছিল। এ জন্য ওই ঘোষণাপত্র চট্টগ্রামে প্রেরণ করা হয়েছিল। চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে মেজর জিয়াউর রহমান ওই ঘোষণাটি বঙ্গবন্ধুর পক্ষে নিজ কন্ঠে ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু তিনি ঘোষণাকারী ছিলেন না। তিনি জীবদ্দশায় কখনো নিজেকে স্বাধীনতার ঘোষক বলে দাবি করেননি।
একটি রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ঘোষণা করার জন্য বিভিন্ন নিয়ম ও রীতি-নীতি অনুসরণ করতে হয়। মুজিবনগর সরকার তা যথাযথভাবে প্রতিপালন করেছিল। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা প্রথমে সরকার গঠন করেছিল। তারপর ওই সরকার বঙ্গবন্ধুর ওই স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র অনুমোদন দিয়েছিল। এরপর স্বাধীনবাংলা বেতারকেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ওই ঘোষণাপত্র ঘোষণা করা হয়েছিল। এ জন্যই ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয়।

১৯৭১ সালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমেদ ভারত সীমান্তে যাওয়ার পূর্বে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বিদায় সাক্ষাৎ করেছিলেন। এ সময় তিনি বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র এবং একটি টেপ রেকর্ডার সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন। তার উদ্দেশ্য ছিল যে, ওই ঘোষণাপত্রে বঙ্গবন্ধুর স্বাক্ষর এবং টেপ রেকর্ডারে বঙ্গবন্ধুর ভয়েস রেকর্ড করে নেবেন। তারপর সুবিধামতো সময়ে স্বাধীনতা ঘোষণার বঙ্গবন্ধুর ওই ভয়েস রেকর্ড বেতারের মাধ্যমে প্রচার করবেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু ওই ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেননি এবং ভয়েস রেকর্ড দেননি। বঙ্গবন্ধু নাকি বলেছিলেন যে, তাঁর কন্ঠে স্বাধীনতার ঘোষণা করা হলে পাকিস্তান সরকার তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা করবে। বিচারের নামে তাঁকে ফাঁসিতে ঝুঁলিয়ে হত্যা করবে। বঙ্গবন্ধু নাকি এই ভয়ে তাজউদ্দীন

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

বঙ্গবন্ধু যদি ৭ মার্চ সরাসরি স্বাধীনতার ঘোষণা দিতেন তাহলে পাকিস্তানী সামরিক জান্তা রেসকোর্স ময়দানেই আক্রমন করতো!

আপডেট সময় : ১২:২৩:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ মার্চ ২০২৩

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জেনারেল জিয়াউর রহমানের জীবদ্দশায় কোনো বিতর্ক ছিল না। কিন্তু জেনারেল জিয়ার মৃত্যুর পর থেকে এই ঘোষণা নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক হয়ে আসছে। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তান রাইফেলস এর ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা-মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা করেন। এই ঘোষণা প্রথমে মুজিবনগর সরকার অনুমোদন করে, পরে তা ১৯৭২ সালের সংবিধানে বিধানকৃত করা হয়। বঙ্গবন্ধুই বাংলাদেশের স্বাধীনতা-মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণাকারী।

২৭ মার্চ মেজর জিয়াউর রহমান চট্টগ্রাম জেলার কালুরঘাট অস্থায়ী বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণাপত্র ঘোষণার মতো করে নিজ কন্ঠে ঘোষণা করেছিলেন। এর পূর্বে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ভাষণের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু পরোক্ষভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। ৭ মার্চের ভাষণ এক অভূতপূর্ব কৌশলী ভাষণ ছিল। বঙ্গবন্ধু তাঁর ভাষণে বলেন, ‘আমি যদি হুকুম দিবার না-ও পারি, তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে। রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরও দেবো, তবুও এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব, ইনশাল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা’।

বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চ পরোক্ষভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছিলেন। যদিও ওই ঘোষণা প্রত্যক্ষ কিংবা আনুষ্ঠানিক ছিল না। কিন্তু স্বাধীনতা-মুক্তিযুদ্ধ ঘোষণার অবশিষ্ট কিছুই ছিল না। ৭ মার্চের ১৯ মিনিটের ভাষণ একটি ঐতিহাসিক ভাষণ। ওই দিন রেসকোর্স ময়দানে উপাস্থিত জনতার হৃদয়ের উদ্বেলিত-উচ্ছ্বসিত আবেগ সারা বংলার মানুষের অন্তরে উত্তাল তরঙ্গের ঢেউ তুলেছিল। এখনো ওই ভাষণ বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে ঘুমিয়ে থাকা স্বাধীনতা-মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগ্রত করে। ৭ মার্চ ভাষণ দেওয়ার পূর্বে বঙ্গবন্ধু বিশিষ্ট রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং ছাত্রলীগ নেতাদের সাথে মতবিনিময় করেছিলেন। তখন ছাত্রলীগের মধ্যে দুটি গ্রুপ ছিল। স্বাধীনতার ঘোষণাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে প্রচন্ড বিতর্ক হয়েছিল। সিরাজুল আলম খান এর সমর্থকরা চেয়েছিল বঙ্গবন্ধু ‘জনগণপ্রজাতন্ত্রী’ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করবেন আর ছাত্রলীগের সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকীর সমর্থিতরা চেয়েছিল স্বাধীনতার ঘোষণা থাকবে, কিন্তু বিচ্ছিন্নতাবাদের অপপ্রচার যাতে কেউ করতে না পারে সেদিকটা বিবেচনায় রাখতে হবে।

৭ মার্চ যদি সরাসরি স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়া হতো তাহলে বাঙালি জাতির স্বাধীনতার সলিল-সমাধি রেসকোর্স ময়দানেই হয়ে যেতো। পাকিস্তানী সামরিক জান্তা রেসকোর্স ময়দানেই আক্রমন করতো। নিশ্চিহ্ন করে দিত বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার সংগ্রাম। বঙ্গবন্ধু এটা আগেই আঁচ করতে পেরেছিলেন। এ কারণেই তিনি সেখানে সরাসরি স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি। তবে ওই ভাষণের মধ্য দিয়ে তিনি কৌশলে সবকিছু ঘোষণা করেছিলেন। ৭ মার্চ যে তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন তা স্বাধীনতাকামী সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ মর্মে মর্মে অনুভব করেছিলেন। মেজর জিয়াউর রহমান বলেছেন যে, ৭ মার্চের ভাষণ ছিল আমাদের (বাঙালি সেনাবাহিনী) মুক্তিযুদ্ধের গ্রীণ সিগন্যাল। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি থেকে দাবি করা হয় যে, মেজর জিয়াউর রহমান ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সূচনালগ্নে কালুরঘাট অস্থায়ী বেতার কেন্দ্র থেকে প্রথম স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। এ জন্য তারা মিছিল-মিটিংয়ে জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া বলে স্লোগান দেন। তারা স্লোগানে বলেন, ‘স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া লও লও লও সালাম’।

২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস। এই স্বাধীনতা দিবস পালনে কোনো বিতর্ক নেই। তবে স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক বিরাজমান রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ২৬ মার্চের ঘোষণাপত্রকে স্বাধীনতাযুদ্ধে মুজিবনগর সরকার অনুমোদন দিয়েছিল। এ কারণে ওই দিনটি স্বাধীনতা দিবস হিসেবে স্বীকৃতিলাভ করেছে। এ জন্যই ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তান রাইফেলস এর ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার ভয়েস রেকর্ড প্রচার করা হয়। ঘোষণাটি ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে প্রচার হওয়ায় তখন তা ব্যাপক জনগোষ্ঠী শুনতে পায়নি। স্বাধীনতাকামী মুক্তিপাগল বাঙালি ও বিশ্ববাসীকে অবহিত করার জন্য বঙ্গবন্ধুর ওই ঘোষণাপত্র ব্যাপকভাবে প্রচার করার প্রয়োজন ছিল। এ জন্য ওই ঘোষণাপত্র চট্টগ্রামে প্রেরণ করা হয়েছিল। চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে মেজর জিয়াউর রহমান ওই ঘোষণাটি বঙ্গবন্ধুর পক্ষে নিজ কন্ঠে ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু তিনি ঘোষণাকারী ছিলেন না। তিনি জীবদ্দশায় কখনো নিজেকে স্বাধীনতার ঘোষক বলে দাবি করেননি।
একটি রাষ্ট্রের স্বাধীনতা ঘোষণা করার জন্য বিভিন্ন নিয়ম ও রীতি-নীতি অনুসরণ করতে হয়। মুজিবনগর সরকার তা যথাযথভাবে প্রতিপালন করেছিল। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা প্রথমে সরকার গঠন করেছিল। তারপর ওই সরকার বঙ্গবন্ধুর ওই স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র অনুমোদন দিয়েছিল। এরপর স্বাধীনবাংলা বেতারকেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ওই ঘোষণাপত্র ঘোষণা করা হয়েছিল। এ জন্যই ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয়।

১৯৭১ সালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমেদ ভারত সীমান্তে যাওয়ার পূর্বে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বিদায় সাক্ষাৎ করেছিলেন। এ সময় তিনি বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র এবং একটি টেপ রেকর্ডার সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন। তার উদ্দেশ্য ছিল যে, ওই ঘোষণাপত্রে বঙ্গবন্ধুর স্বাক্ষর এবং টেপ রেকর্ডারে বঙ্গবন্ধুর ভয়েস রেকর্ড করে নেবেন। তারপর সুবিধামতো সময়ে স্বাধীনতা ঘোষণার বঙ্গবন্ধুর ওই ভয়েস রেকর্ড বেতারের মাধ্যমে প্রচার করবেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু ওই ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেননি এবং ভয়েস রেকর্ড দেননি। বঙ্গবন্ধু নাকি বলেছিলেন যে, তাঁর কন্ঠে স্বাধীনতার ঘোষণা করা হলে পাকিস্তান সরকার তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা করবে। বিচারের নামে তাঁকে ফাঁসিতে ঝুঁলিয়ে হত্যা করবে। বঙ্গবন্ধু নাকি এই ভয়ে তাজউদ্দীন