রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

জাতিসংঘ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুদ্ধ সংঘাত পরিহার করে মানব কল্যাণে কাজ করুন,

সিলেট বিভাগীয় প্রতিনিধি

 

 

বিশ্ব নেতাদের যুদ্ধ-সংঘাতের পথ পরিহার করে শান্তি, মানবজাতির কল্যাণ এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান।
গতকাল শুক্রবার বাংলাদেশ সময় রাত ১১টা ২২ মিনিটে ভাষণ শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১৯৭৪সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ভাষণ অনুসরণ করে সপ্তদশ বারের মতো ইউএনজিএ অধিবেশনে বাংলায় ভাষণ দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আজ আপনাদের সকলের কাছে বিশ্ব নেতাদের কাছে আমার আবেদন, যুদ্ধ, স্যাংশন ও সংঘাতের পথ পরিহার করুন এবং আমাদের জনগণ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য স্থায়ী শান্তি, মানবজাতির কল্যাণ এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করুন। ১৯৭১সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং ১৯৭৫সালে একই রাতে পরিবারের সবাইকে হারানোর কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমি নিজে নিপীড়িত এবং যুদ্ধ ও হত্যার নৃশংসতার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে যুদ্ধ, হত্যা, অভ্যুত্থান ও সংঘাতের ভয়াবহতার কারণে মানুষ যে বেদনা ও যন্ত্রণা সহ্য করে তা অনুভব করতে পারি।
বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কার্যকারিতার সমালোচনা করে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর দক্ষতা ও বৈধতা নিয়ে মানুষের আস্থা কমে যাচ্ছে। এর ফলে একটা শান্তিপূর্ণ এবং সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে অর্জিত সাফল্য ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। শান্তি প্রতিষ্ঠায় সকলকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সকলের জন্য নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ এবং টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার জন্য অভিন্ন সঙ্কট মোকাবিলায় আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালাতে হবে। এ জন্য আমাদের অবশ্যই বিভাজন সঙ্কীর্ণতা ও বিচ্ছিন্নতার বিপরীতে একতা সহমর্মিতা ও বহুপাক্ষিকতা বেছে নিতে হবে।
তিনি বলেন, শান্তি ও টেকসই সমৃদ্ধি অর্জনের উদ্দেশ্যে আমাদের অবশ্যই সুবিচার, ন্যায় ও নীতি অনুসরণ করতে হবে, যার ভিত্তি হবে জাতিসংঘ সনদ এবং ২০৩০ এজেন্ডা। এ ধরনের জঘন্য অপরাধ শুধু মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিকেই আঘাত করে না, এটি অস্থিরতাকে উসকে দেয় এবং বিভিন্ন ধর্মীয় বিশ্বাসের মানুষের মধ্যে বিদ্যমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। বাংলাদেশ ফিলিস্তিনের পাশে থাকবে বলে জানিয়ে ফিলিস্তিন ইস্যুতে শেখ হাসিনা বলেন, এ বছর ফিলিস্তিনের উপর বিপর্যয় নিয়ে আসা নাকবা এর ৭৫ বছর পূর্ণ হলো। ফিলিস্তিনি জনগণের বৈধ অধিকার অর্জনের পথ এখনও আশার মুখ দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। ফিলিস্তিনের জনগণের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশ ফিলিস্তিনের পাশে থাকবে।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত মাসে রোহিঙ্গাদের বাস্তুচূত হওয়ার ৬বছর পূর্ণ হয়েছে। সম্পূর্ণ মানবিক কারণে আমরা অস্থায়ীভাবে তাদের আশ্রয় দিয়েছি। কিন্তু পরিস্থিতি এখন আমাদের জন্য সত্যিই অসহনীয় হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন বাস্তুচূত রোহিঙ্গারা তাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যেতে চায় এবং সেখানে তারা শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করতে আগ্রহী। আসুন আমরা এই নিঃস্ব মানুষের জন্য তাদের নিজের দেশে ফিরে যাওয়া নিশ্চিত করি, জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ চিরজীবী হোক বলে বাষন শেষ করেন।

থেকে আরও পড়ুন

থেকে আরও পড়ুন